"সালাম সালাম হাজার সালাম" গানের রচয়িতা

Fazl-E-Khuda (1941 – 2021)

ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম প্রধান গান “সালাম সালাম হাজার সালাম, সকল শহীদ ,স্মরণে”র গীতিকার কবি ফজল-এ-খোদা’র জীবন ও কর্ম তুলে ধরতে এই সাইট।ফজল-এ-খোদা একজন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর সম্পর্কে জানলে সকলে বিষয়টি অনুধাবন করতে পারবেন। তিনি একজন প্রচারবিমুখ এবং নিভৃতচারী ব্যক্তি ছিলেন। সৃষ্টিশীল ব্যক্তিরা এমনটাই হয়ে থাকেন। এই সাইটে তাঁর বহুমুখী বিপুল কর্ম তুলে ধরার জন্য আমাদের আন্তরিক চেষ্টা থাকবে।

ফজল-এ-খোদা জন্মগ্রহণ করেন পাবনার বেড়া থানার বনগ্রামে ৯ মার্চ ১৯৪১ এবং মৃত্যুবরণ করেন ৪ জুলাই ২০২১ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে । তিনি একাধারে ছিলেন কবি, গীতিকার, শিশুসাহিত্যিক ও শিশুসংগঠক। বেতার এবং টেলিভিশনের একাধিক অনুষ্ঠানের পরিকল্পক, লেখক ওনির্দেশক। শিশুসংগঠন শাপলা শালুকের আসর-এর প্রতিষ্ঠাতা ও মিতাভাই নামে খ্যাত।পেশাগত জীবনে বাংলাদেশ বেতারের পরিচালক ছিলেন।

কবিতা, গান, নাটক, প্রবন্ধ, স্মৃতিকথা, শিশুসাহিত্য ও সম্পাদনা মিলিয়ে তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা  ৩৫।গান লিখেছেন ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে। তাঁর গানের ভুবন বিচিত্র- দেশাত্মবোধক, পল্লগীতি, গণসংগীত, আধুনিক পাশাপাশি ইসলামি গানের সংখ্যাও কম নয়। ২০০৬ সালে বিবিসির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাংলা গানের জরিপে সেরা ২০টি গানের তালিকায় তাঁর রচিত ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ ১২তম গানের স্থান পায়।

ফজল-এ-খোদা একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন বীর সৈনিক। তরুণ বয়সে সরকারি চাকরি ছেড়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। সেসময় চাকুরিতে অনুপস্থিত থাকার জন্য ৪ এপ্রিল ১৯৭১ তাঁকে রেডিও পাকিস্তানের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। তিনি রণাঙ্গনে ২নং সেক্টরে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। দেশ স্বাধীনের পর কাজী নজরুল ইসলামকে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে নিয়ে এলে তাঁকে এদেশের ‘জাতীয় কবি’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার সাংস্কৃতিক আন্দোলনে ফজল-এ- খোদা সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

সংগীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার কবি ফজল-এ-খোদা’কে ২০২৩ সালে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করে।